এই গরমে নবজাতকের যত্ন, করণীয় ও পরিচর্যা

আপনার ছোট্ট শিশুটি কি গরমে অস্বস্তি বোধ করছে? আপনার ছোট্ট শিশুটিকে কীভাবে এই অস্বস্তিদায়ক গরম থেকে বাঁচাবেন তা নিয়ে চিন্তিত? 

এই-গরমে-নবজাতকের-যত্ন-করণীয়-ও-পরিচর্যা
আপনি কি বুঝতে পারছেন না, এই গরমে নবজাতকের ত্বকের যত্ন কীভাবে নেবেন কিংবা গরমে তাদের পোশাক নির্বাচনে হিমসিম খাচ্ছেন? তাহলে আজকের এই কন্টেন্ট টি আপনাদেরই জন্য।

এতক্ষণে কন্টেন্ট এর টাইটেল আর আমাদের প্রশ্ন দেখে আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতেই পেরেছেন যে, আজকের কন্টেন্ট টি হতে চলেছে এই অসহ্য গরমে নবজাতকের যত্ন ও পরিচর্যা নিয়ে।এই গরমে তাদের সকল অপ্রকাশিত অস্বস্তিদায়ক অনুভূতিগুলো তুলে ধরা তো হবেই তার সাথে আরও থাকবে তাদের সমস্যাগুলোর সম্ভাব্য আলোচনা।

সূচিপত্রঃ এই গরমে নবজাতকের যত্ন, করণীয় ও পরিচর্যা

  • গরমে নবজাতকের যত্ন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
  • নবজাতকের শরীর ও ত্বকের প্রতি গরমের প্রভাব
  • শিশুর পোশাক নির্বাচন
  • শিশুর পানিশূন্যতা রোধে করণীয়
  • গরমে নবজাতকের গোসলের নিয়ম
  • গরমে নবজাতকের পরিচ্ছন্নতা
  • ঘুম ও বিশ্রামের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি
  • মা বাবার জন্য করণীয় ও সতর্কতা
  • মন্তব্য

গরমে নবজাতকের যত্ন কেন প্রয়োজন

নবজাতকের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় অনেক কম। গরমের তিব্রতা ও উচ্চ আর্দ্রতা তাদের শরীরে দ্রুত প্রভাব ফেলে যা অস্বস্তি এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার কারণ হতে পারে। সঠিক যত্ন না নিলে নবজাতক ডিহাইড্রেশন, ঘামাচি, ত্বকের সংক্রমণ, তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত অসুস্থতা  (যেমন-হিট স্ট্রোক) ইত্যাদির শিকার হতে পারে।

নবজাতকের জন্য প্রয়োজনীয় যত্ন নেয়ার কারণ

  • ত্বক সংবেদনশীল - নবজাতকের ত্বক নাজুক এবং সংবেদনশীল হওয়ার সহজেই বলিরেখা বা চুলকানি দেখা দিতে পারে।
  • ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি - প্রচন্ড গরমে শিশুর শরীর দ্রুত পানি হারায় যা য়ার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। 
  • ঘামাচি ও ত্বকের সমস্যা - ঘামের কারনে ফুসকুরি, ত্বকের সমস্যা ও লালচে দাগ দেখা দিতে পারে।
  • ঘুমের ব্যাঘাত - অতিরিক্ত গরমে শিশুর ঘুমের ব্যঘাত ঘটতে পারে যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
  • আরামদায়ক পরিবেশ প্রয়োজন - নবজাতক স্বস্তি না পেলে বিরক্ত হয়ে কাঁদতে থাকে যা তার খাওয়ার প্রবনতা ও শারীরিক কার্যক্রমে প্রভাব ফেলে।

সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন নিশ্চিত করলে তিব্র গরমেও নবজাতকের সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব।

নবজাতকের শরীর ও ত্বকের প্রতি গরমের প্রভাব 

নবজাতকের শরীর অত্যন্ত সংবেদনশীল হওয়ার ফলে গরমের প্রভাবে তাদের শরীর দ্রুতই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দীর্ঘসময় গরম থাকলে শিশুর শরীর পানিশূন্য হয়ে যেতে পারে এবং নানন ধরনের ত্বকজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। 

শরীরের উপর গরমের প্রভাব

  • ডিহাইড্রেশন (পানিশূন্যতা) - অতিরিক্ত গরমে ঘামের মাধ্যমে তরল বেড়িয়ে যেতে পারে, যা শরীরে পানিশূন্যতার ঝুঁকি বাড়ায়। লক্ষ্মণগুলোর মধ্যে কম প্রস্রাব, শুষ্ক মুখ, কান্নায় পানি না থাকা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। 
  • অতিরিক্ত ঘাম ও শরীরের অস্বস্তি - উচ্চ তাপমাত্রায় শিশু অতিরিক্ত ঘামতে পারে যা অস্থির ও বিরক্ত করে ফেলে। 
  • তাপমাত্রা জনিত অসুস্ততা (হিট স্ট্রোক) - গরমের কারনে শিশুর শরীরের তাপমাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোক হতে পারে যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
  • ঘুমের ব্যাঘাত - শরীরে অতিরিক্ত গরম থাকলে শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। 

ত্বকের উপর গরমের প্রভাব

  • ঘামাচি ও বলিরেখা - অতিরিক্ত গরমের কারনে শিশুর শরীরে ছোট ছোট লাল দাগ দেখা দিতে পারে যা চুলকানি ও অস্বস্তির কারন হয়।
  • ত্বকের লালদাগ ও সংক্রমণ - ঘাম ও ময়লার কারনে শিশুর নাজুক ত্বকে ফুসকুড়ি, লালচে দাগ এবং ছত্রাকজনিত সংক্রমণ হতে পারে।
  • শুষ্ক ও খসখসে ত্বক - গরমে শিশুর ত্বক আর্দ্র হয়ে তার সংবেদনশীল ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।

শিশুর পোশাক নির্বাচন

কি ধরনের পোশাক পড়ানো উচিত

  • ঢিলাঢালা, হালকা রঙের এবং ১০০% সুতি কাপড়ের পোশাক পরিধান করান
  • গরমে অতিরিক্ত পোশাক পরানো শিশুর শরীর গরম করে দিতে পারে, তাই শুধুমাত্র পাতলা জামাকাপড় পড়ানো যথেষ্ট। 
  • যদি ঘর বেশি গরম হয়, তাহলে শিশুকে শুধু নরম কাপড়ের ডায়াপার বা পাতলা জামা পড়িয়ে রাখতে পারেন।
এই-গরমে-নবজাতকের-যত্ন-করণীয়-ও-পরিচর্যা

গরমে শিশুদের মোটা কাপড় পরানো কি প্রয়োজন

  • অনেকসময় ধারনা করা হয় নবজাতককে সবসময় গরম রাখতে হবে, তাই অতিরিক্ত কাপড় পরানো হয়। কিন্তু গরমের দিনে এটি শিশুর অস্বস্তি তৈরি করতে পারে এবং ঘামের কারনে তার শরীরে নানা ধরনের মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  • যদি ঠান্ডা বাতাস থাকে, তবে হালকা সুতি কাপড়ের একটি চাদর ব্যাবহার করুন।

শিশুর পানিশূন্যতা রোধে করণীয় 

শিশুর শরীরের প্রায় ৭৫-৮০% শতাংশ পানি দিয়ে গঠিত। তাই তারা সহজেই পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হতে পারে। গরমকালে অতিরিক্ত গরমের ফলে নবজাতকের শরীরে প্রয়োজনীয় তরল এবং লবণের ঘাটতি দেখা যায় যা ডিহাইড্রেশনের কারণ হতে পারে।

ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ

  • কম প্রস্রাব হওয়া (৬ ঘন্টার বেশি সময় ধরে প্রস্রাব না হলে তা চিন্তার বিষয়)। 
  • কান্নার সময় চোখে পানি না আসা।
  • চোখ ও মুখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া। 
  • শিশুর অতিরিক্ত অস্থিরতা বা দুর্বল হয়ে যাওয়া।
  • চোখের চারপাশে ফোলা বা দেবে যাওয়া।

কিভাবে প্রতিরোধ করবেন

  • ছয় মাসের কম বয়সী শিশুকে শুধু মায়ের দুধ খাওয়ান, কারণ এটি শরীরের পানিশূন্যতা দূর করে। 
  • গরমের দিনে ঘন ঘন দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করুন। 
  • শিশুর শরীর যদি খুব গরম হয়ে যায়, তাহলে নরম ও ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে নিন।

গরমে নবজাতকের গোসলের নিয়ম

প্রতিদিন গোসল করান কি প্রয়োজন

  • নবজাতককে প্রতিদিন গোসল করান যেতে পারে, তবে যদি শিশুর ঠান্ডা লেগে যাওয়ার প্রবণতা থাকে, তাহলে একদিন পর পর গোসল করানো ভালো। 
  • যদি পুরো গোসল করানো সম্ভব না হয়, তাহলে দিনে ২-৩ বার নরম কাপড়ে শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে।

গোসলে কোন ধরনের পানি ব্যাবহার করা উচিত

  • হালকা গরম, বা কুসুম গরম পানি ব্যাবহার করা ভালো। খুব বেশি গরম বা ঠান্ডা পানি শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • পানি তাপমাত্রা পরিক্ষা করার জন্য হাত বা কুনুই ব্যাবহার করিন।

কোন সময় গোসল করানো ভালো

  • সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২ টার মধ্যে বা বিকাল ৩ টা থেকে বিকাল ৫ টার মধ্যে গোসল করানো ভালো। কারণ এই সময়ে তাপমাত্রা সহনীয় হয়।
  • খুব সকালে বা রাতে গোসল করালে শিশুর ঠান্ডা লাগতে পারে।

গোসলে কি কি ব্যাবহার করা উচিত

  • অতিরিক্ত ক্যামেকেলযুক্ত শ্যাম্পু বা সাবান ব্যাবহার না করাই ভালো। 
  • সপ্তাহে ২-৩ দিন মৃদু এবং শিশুর জন্য উপযোগী সাবান ব্যাবহার করুন।
  • শিশুর মাথায় খুব বেশি ঘাম হলে শিশুর মাথায় সপ্তাহে দুই দিন মৃদু শ্যাম্পু ব্যাবহার করা যেতে পারে।
  • সরিষার তেল বা অন্য যেকোনো তেল ব্যাবহার করলে তা ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে যাতে তেল জমে ঘামাচি না হয়।

গোসলের ধাপ 

  • প্রস্তুতি নিন - আগে থেকে কুসুম গরম পানি, ডায়াপার, তোয়ালে সাথেই রাখুন।
  • শিশুকে ধীরে ধীরে পানিতে রাখুন - মাথা ও ঘারের নিচে হাত দিয়ে সমর্থন দিন।
  • মাথা থেকে ধোয়া শুরু করুন - পরিস্কার পানি দিয়ে শিশুর মাথা ধুয়ে দিন, এবং মৃদু শ্যাম্পু ব্যাবহার করুন সপ্তাহে ২-৩ বার।
  • গোটা শরীর ধুয়ে নিন - নরম কাপড় বা স্পঞ্জ ব্যাবহার করে হাত, পা, ঘাড়, বগল, উরু ও পিঠ পরিস্কার করুন।
  • অতিরিক্ত পানি ঝড়িয়ে নিন - তোয়ালে দিয়ে অলতোভাবে শরীর মুছুন এবিং বিশেষকরে ভাজযুক্ত জায়গাগুলো যেমন - কাধ, উরু, বগল ভালোভাবে শুকিয়ে নিন।
  • পরিস্কার ও পাতলা সুতি কাপড় পরিয়ে দিন।

গরমে নবজাতকের পরিচ্ছন্নতা 

  • শিশুর হাত ও মুখ পরিস্কার রাখা 
  • প্রতিবার খাওয়ানোর পর নরম ও পরিস্কার কাপড়ে শিশুর মুখ মুছে নিন।
  • দিনে কয়েকবার হাতে ও গলায় জমে থাকা লালা পরিস্কার করুন, এটি ত্বকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে।

ডায়াপার পরিবর্তন ও পরিচ্ছন্নতা 

  • নবজাতকের ডায়াপার নিয়মিত পরিবর্তন করা জরুরি, বিশেষকরে মলত্যাগ করলে সাথে সাথে বদলে ফেলতে হবে।
  • প্রতিবার ডায়াপার বদলানোর সময় কুসুম-গরম পানিতে নরম কাপড় ভিজিয়ে গোপনাঙ্গ পরিস্কার করুন। 
  • প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর জন্য নির্দিষ্ট ময়েশ্চারাইজার বা ডায়াপার ক্রিম ব্যাবহার করুন।

ঘাম হলে কি করবেন

  • শিশুর শরীরে ঘাম জমে থাকলে নরম ও শুকনো কাপড় দিয়ে ভালভাবে মুছে নিন।
  • অতিরিক্ত ঘাম হলে ২-৩ বার ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে নিন। 
  • শিশুর শরীরে যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে সে জন্য হালকা কাপড় পরান।

নখ কাটা ও পরিচর্যা 

  • নবজাতকের নখ দ্রুত বড় হয় এবং তারা নিজেদের নিখ দিয়ে মুখে বা চোখে আচড় দিতে পারে, তাই নিয়মিত নিখ ছোট করে কেটে দেয়া উচিত।
  • নখ কাটার জন্য শিশুর জন্য উপযোগী বিশেষ নখ কাটার কাঁচি ব্যাবহার করুন তবে নখ বেশি ছোট করবেন না।

কানের ও নাকের পরিচ্ছন্নতা 

  • শিশুর কানে বা নাকে ময়লা জমে গেলে পরিস্কার কাপড় বা তুলা দিয়ে আলতোভাবে মুছে দিন।
  • কানের ভিতরে বা নাকের গভীরে কিছু ঢোকানোর চেষ্টা করবেন না, কারন এটি শিশুর জন্য বিপদজনক হতে পারে।

ঘুম ও বিশ্রামের জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি 

নবজাতকেরা দিনে ১৪-১৭ ঘন্টা পর্যন্ত ঘুমায়, তবে তাদের ঘুমের সময় ও প্যাটার্ন অনিয়মিত হতে পারে। গরমের মধ্যে  আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি না করলে শিশুর ঘুমে ব্যাঘাত হতে পারে বা অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। তাই সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। 

ঘরের তাপমাত্রা ও বাতাসের ব্যাবস্থা

  • নবজাতকের ঘরের আদর্শ তাপমাত্রা ২৫-২৬° সেলসিয়াস হওয়া উচিত। 
  • খুব গরম থাকলে জানালা খুলে রাখুন, যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে। 
  • সরাসরি শিশুর দেহে ফ্যান বা এসির বাতাস লাগতে দেবেন না, তবে হালকা বাতাস চলাচলের ব্যাবস্থা করুন।

ফ্যান বা এসি ব্যাবহার করার নিয়ম 

  • যদি ফ্যান চালান, তবে সরাসরি সেটি শিশুর শরীরে বা মুখে লাগাবে না, এমনভাবে ঘুমিয়ে রাখুন।
  • এসি ব্যাবহার করলে তাপমাত্রা খুব কমিয়ে দেবেন না, এক্ষেত্রে আদর্শ তাপমাত্রা (২৫-২৬°সেলসিয়াস) 
  • এসি রুমে থাকলে শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে তাই মাঝে মাঝে পানিতে ভেজানো নরম কাপড় মুখে ও শরীরে মুছে দিন।

শিশুর জন্য উপযুক্ত বিছানা 

  • শক্ত, সমান ও আরামদায়ক গদি ব্যাবহার করুন, খুব বেশি নরম বুছানা শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
  • বিছানায় অতিরিক্ত কম্বল, বালিশ বা খেক্না রাখবেন না, কারন এগুলো শিশুর শ্বাস নেওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  • পাতলা ও সুতি চাদর বিছিয়ে দিন যা শিশুর গায়ে গরম লাগবে না।

ঘুমের আগে শিশুকে শান্ত করার কিছু উপায় 

  • হালকা স্পর্শ বা আলতোভাবে মাথায় হাত বুলিএ দিন, এতে শিশু আরামদায়ক অনুভব করবে।
  • ঘুমানোর আগে হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করানো যেতে পারে যা, শিশুকে শিথিল হতে সাহায্য করে। 
  • জোড়ে শব্দ, উজ্জ্বল আলো বা উচ্চ শব্দযুক্ত গান  বা টিভি বন্ধ রাখুন, কারন এগুলো শিশুর ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। 

শিশুকে রাতের ও দিনের পার্থক্য বোঝানো

  • দিনে শিশুকে উজ্জ্বল আলো এবং পারিপার্শ্বিক শব্দের মধ্যে রাখুন, যাতে তারা বুঝতে পারে এটি খেলার বা জেগে থাকার সময়।
  • রাতে আলো কমিয়ে দিন ও শান্ত পরিবেশ বজায় যাতে তারা বুঝতে পারে এটি ঘুমোনোর সময়।

মা বাবার জন্য করণীয় ও সতর্কতা 

নবজাতকের ত্বক ও শরীর তাপমাত্রার প্রতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাই গরমের দিনে মা বাবার সচেতনতা শিশুর শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। 
 
এই-গরমে-নবজাতকের-যত্ন-করণীয়-ও-পরিচর্যা

করণীয়

  • তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ - ঘরের তাপমাত্রা ২৫-২৬° সেলসিয়াস রাখুন, সরাসরি ফ্যান ও এসি লাগতে দেবেন না। 
  • পর্যাপ্ত তরল - বারবার মায়ের দুধ খাওয়ান এবং শিশুর প্রস্রাবের পরিমান লক্ষ করুন।
  • সঠিক পোশাক - হালকা, ঢিলাঢালা এবং সুতি কাপড় পরান। অতিরিক্ত কাপড় এড়িয়ে চলুন।
  • পরিচ্ছন্নতা - প্রতিদিন গোসল বা কুসুম গরম পানিতে শরীর মুছুন, ডায়াপার নিয়মিত পরিবর্তন করুন।
  • ঘুমের পরিবেশ - শান্ত, শীতল ও হালকা আলোযুক্ত ঘর তৈরি করুন। অতিরিক্ত কাপড় বা খেলনা বিছানায় রাখবেন না।

সতর্কতা

  • সরাসরি রোদে বা অতিরিক্ত গরমে রাখবেন না।
  • পানি বা অন্য তরল দেবেন না ( শুধু মায়ের দুগ্ধ পান করাবেন)  
  • অতিরিক্ত ঘাম হলে দ্রুত শুকনো কাপড়ে মুছে নিন।
  • অতিরিক্ত তেল বা ভারী লোশন ব্যাবহার করবেন না।
  • শিশুর ঘুমের সময় জোড়ে শব্দ বা উজ্জ্বল আলো এড়িয়ে চলুন। 

মন্তব্য

এতক্ষণের আলোচনা থেকে তো আপনারা নিশ্চয়ই বুঝতেই পেরেছেন, নবজাতক এই অবুঝ শিশুদের দায়িত্ব, তাদের ভালো মন্দ সবটাই নির্ভর করে অভিভাবকদের সচেতনতার উপর। কারন শিশুর শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যাবস্থা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কম। অতিরিক্ত গরম, ঘাম এবং পানিশুন্যতা শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সঠিক পরিবেশ, হালকা পোশাক নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা এবং পর্যাপ্ত মাতৃদুগ্ধ পান করানোর মাধ্যমে নবজাতককে সুস্থ রাখা সম্ভব। 

তাহলে আজ এ পর্যন্তই। সতর্ক থাকুন, একজন তৎপর অভিভাবক হিসেবে যত্নের মাধ্যমে নবজাতকের জন্য আরামদায়ক ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করুন। কারণ তাদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ রাখার দায়িত্ব আপনাদেরই। আর হ্যাঁ, যাওয়ার আগে আজকের কন্টেন্ট টি আপনাদের কেমন লেগেছে তা কিন্তু জানাতে ভুলবেন না।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url